বিনোদন ডেস্ক:
গত ২ অক্টোবর ছিল গান্ধী জয়ন্তী। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-তে সেই উপলক্ষে ছিল একটি বিশেষ এপিসোড আর সেখানেই বলিউড সুপার স্টার অমিতাভ বচ্চন ঘোষণা করলেন যে বচ্চন পদবির সঙ্গে কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কোনো যোগাযোগ নেই। কারণ এই পদবিটি তাদের পারিবারিক পদবি নয়। অমিতাভ জানান, তার বাবা হরিবংশ রাই কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি অনুগত থাকার বিরোধী ছিলেন। তাই এই অ-সাম্প্রদায়িক পদবির উদ্ভাবন।
অমিতাভ ওই বিশেষ এপিসোডে বলেন, ”আমার পদবি বচ্চন কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নয় কারণ আমার বাবা এর বিরুদ্ধে ছিলেন। আমার পদবি ছিল শ্রীবাস্তব কিন্তু ওই পদবিতে আমরা বিশ্বাস করি না। আমি খুব গর্বিত যে আমিই প্রথম বচ্চন পদবিটি বহন করেছি। যখন বাবা আমাকে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি করতে নিয়ে যান, তখন তাকে আমার পদবি জিজ্ঞাসা করা হয়। তখনই বাবা ঠিক করেন যে আমার পদবি হবে বচ্চন। সেনসাস দফতরের কর্মীরা যখন আমার বাড়িতে আসেন এবং আমার ধর্ম কি সেটা জানতে চান, আমি বলি যে আমার কোনো ধর্ম নেই, আমি একজন ভারতীয়।”
অমিতাভ তার বাবা, হিন্দি সাহিত্যের বিখ্যাত কবি হরিবংশ রাই বচ্চনের আদর্শকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গেই বহন করে চলেছেন। পদবি যেহেতু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পরিচায়ক, তাই সেই পদবিকেই পরিত্যাগ করেছিলেন হরিবংশ রাই। গান্ধীজির মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হরিবংশ রাই মানুষকে রাখতেন সবার উপরে, তার পেশাকে নয়। উৎসবের দিনে বয়োঃজ্যেষ্ঠদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণামের ভারতীয় রীতিকে তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন কীভাবে, তা জানালেন অমিতাভ।]
”আমার কোনো লজ্জা নেই বলতে যে আমার বাবা তার চারপাশের সব মানুষকেই তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতেন। হোলির সময় বয়োঃজ্যেষ্ঠ মানুষের পায়ে আবির দিয়ে তাকে প্রণাম করা আমাদের ঐতিহ্য। আমার বাবা, হরিবংশ রাই বচ্চন হোলির উৎসব শুরু করার আগে বাড়ির জমাদারের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম করতেন”, বলেন অমিতাভ।
এমন একটি বিরল ব্যক্তিত্বই অমিতাভ বচ্চনকে সারা জীবন অনুপ্রাণিত করেছেন। তাই তার দেয়া অ-সাম্প্রদায়িক এই পদবিটিই অমিতাভ ও তার পরবর্তী প্রজন্ম গর্বের সঙ্গে বহন করে চলেছে। শুধু তাই নয়, এই অ-সাম্প্রদায়িক ভারতীয় পদবীকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে গেছেন। এর চেয়ে ভালো গান্ধী জয়ন্তীর উদযাপন আর কী হতে পারে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস